ঢাকা ০৯:৪৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

ঢাবিতে চারুকলার প্রতিকৃতিতে আগুন দিল কারা?

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট সময় : ১১:৫১:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

চারুকলার প্রতিকৃতিতে আগুন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে তৈরি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রা মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। কারা আগুন দিয়েছে, সে প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশাসন থেকে সর্বত্র। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোররাতে চার দেয়ালের ভেতরে স্থাপিত এসব শিল্পকর্মে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে, যা গোটা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় চারুকলার নিরাপত্তায় প্রক্টরিয়াল টিমের কোনো সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। যদিও দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা গেটের বাইরে অবস্থান করছিলেন, চারুকলার অভ্যন্তরভাগ ছিল কার্যত নজরদারির বাইরে।

প্রক্টরিয়াল টিমের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেদিন রাতে দায়িত্বে ছিলেন মাত্র চারজন, তবে ঘটনার স্থানে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। রাত ৮টার দিকেই তাঁরা স্থান ত্যাগ করেন।

অন্যদিকে, গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, চারুকলার আনন্দ শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই আয়োজকদের সতর্ক করা হয়েছিল যে, যেকোনো সময় ফ্যাসিস্ট সহানুভূতিশীল গোষ্ঠী অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটাতে পারে। সেই সতর্কতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের দায়িত্বে থাকা এসআই তারক কুমার হালদার বলেন, এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি নন এবং সংশ্লিষ্ট ওসি’র সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন।

শোভাযাত্রা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, “ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখার চেষ্টা করছি। ফুটেজ পাওয়ার পরই বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, ঘটনার সময় প্রক্টরিয়াল টিমের দুজন সদস্য দায়িত্বে ছিলেন, তবে তারা ফজরের নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। দারোয়ানও তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা, এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়ে থাকতে পারে, আবার দুর্ঘটনাও হতে পারে। সিসি ক্যামেরা থাকলেও পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ফুটেজ দেখা যাচ্ছে না। বিকল্পভাবে ফুটেজ দেখার চেষ্টা চলছে।”

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক সমন্বয় নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন

ঢাবিতে চারুকলার প্রতিকৃতিতে আগুন দিল কারা?

আপডেট সময় : ১১:৫১:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে তৈরি ফ্যাসিবাদের মুখাকৃতি ও শান্তির পায়রা মোটিফে আগুন দেওয়ার ঘটনায় নিরাপত্তা ব্যবস্থার ঘাটতি নিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। কারা আগুন দিয়েছে, সে প্রশ্ন এখন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশাসন থেকে সর্বত্র। শনিবার (১২ এপ্রিল) ভোররাতে চার দেয়ালের ভেতরে স্থাপিত এসব শিল্পকর্মে আগুন লাগানোর ঘটনা ঘটে, যা গোটা বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে উদ্বেগের সৃষ্টি করেছে।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার সময় চারুকলার নিরাপত্তায় প্রক্টরিয়াল টিমের কোনো সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। যদিও দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যরা গেটের বাইরে অবস্থান করছিলেন, চারুকলার অভ্যন্তরভাগ ছিল কার্যত নজরদারির বাইরে।

প্রক্টরিয়াল টিমের একাধিক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সেদিন রাতে দায়িত্বে ছিলেন মাত্র চারজন, তবে ঘটনার স্থানে কেউ উপস্থিত ছিলেন না। রাত ৮টার দিকেই তাঁরা স্থান ত্যাগ করেন।

অন্যদিকে, গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, চারুকলার আনন্দ শোভাযাত্রাকে কেন্দ্র করে আগে থেকেই আয়োজকদের সতর্ক করা হয়েছিল যে, যেকোনো সময় ফ্যাসিস্ট সহানুভূতিশীল গোষ্ঠী অনাকাঙ্ক্ষিত কিছু ঘটাতে পারে। সেই সতর্কতা সত্ত্বেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো জোরালো নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ উঠেছে।

পুলিশের দায়িত্বে থাকা এসআই তারক কুমার হালদার বলেন, এ বিষয়ে তিনি মন্তব্য করতে রাজি নন এবং সংশ্লিষ্ট ওসি’র সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন।

শোভাযাত্রা আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম শেখ বলেন, “ঘটনার বিষয়ে তদন্ত চলছে। আমরা সিসিটিভি ফুটেজ দেখার চেষ্টা করছি। ফুটেজ পাওয়ার পরই বিস্তারিত বলা সম্ভব হবে।”

এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দিন আহমেদ দাবি করেন, ঘটনার সময় প্রক্টরিয়াল টিমের দুজন সদস্য দায়িত্বে ছিলেন, তবে তারা ফজরের নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন। দারোয়ানও তখন ঘুমিয়ে ছিলেন। তিনি বলেন, “আমাদের ধারণা, এটি পরিকল্পিতভাবে করা হয়ে থাকতে পারে, আবার দুর্ঘটনাও হতে পারে। সিসি ক্যামেরা থাকলেও পাসওয়ার্ড ভুলে যাওয়ায় তাৎক্ষণিকভাবে ফুটেজ দেখা যাচ্ছে না। বিকল্পভাবে ফুটেজ দেখার চেষ্টা চলছে।”

এই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং প্রশাসনিক সমন্বয় নিয়ে নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত ঘটনা উদ্ঘাটনের দাবি জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।