জনতার ঢলে পরিপূর্ণ সোহরাওয়ার্দী উদ্যান

- আপডেট সময় : ০৩:০০:৫৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫ ৩১ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের জনগণের প্রতি সংহতি জানিয়ে আয়োজিত ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচিতে অংশ নিতে লাখো মানুষ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানমুখী হয়েছেন। শনিবার (১২ এপ্রিল) বেলা ৩টায় এই কর্মসূচির শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যান এবং এর আশপাশের এলাকা জনতার ঢলে পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, শাহবাগ, দোয়েল চত্বর ও নীলক্ষেতসহ রাজধানীর বিভিন্ন প্রান্ত থেকে মিছিল আসতে শুরু করে সকাল থেকেই। হাতে ফিলিস্তিনের পতাকা, প্রতিবাদী ব্যানার ও ফেস্টুন নিয়ে জনতা জড়ো হন উদ্যানজুড়ে। কর্মসূচি শুরুর আগেই কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায় পুরো সোহরাওয়ার্দী উদ্যান।
কর্মসূচির সুশৃঙ্খলতা বজায় রাখতে প্রতিটি প্রবেশপথে সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে দেখা গেছে স্বেচ্ছাসেবকদের। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি চত্বর, দোয়েল চত্বর ও আশপাশের এলাকায় দেখা গেছে স্থানীয় বিক্রেতারা ফিলিস্তিনের পতাকা ও নানা ধরনের প্রতিবাদী সামগ্রী নিয়ে বসেছেন।
উপস্থিত ছিলেন দলমত নির্বিশেষে নানা বয়সী মানুষ। অনেকে বলছেন, এটি শুধু ফিলিস্তিনের মানুষের প্রতি সংহতির বহিঃপ্রকাশ নয়, বরং বিশ্বব্যাপী মানবাধিকারের পক্ষে এক জোরালো অবস্থানও। একাধিক অংশগ্রহণকারী জানান, ফিলিস্তিনে দীর্ঘদিন ধরে মুসলমানদের ওপর যেভাবে নিপীড়ন ও গণহত্যা চলছে, তা মেনে নেওয়া যায় না। এ অবস্থার প্রতিবাদেই তারা এখানে এসেছেন।

আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, গাজায় চলমান ইসরায়েলি আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক জনমত গঠন এবং মানবিক সহানুভূতি জাগ্রত করতেই আয়োজন করা হয়েছে এই ব্যতিক্রমধর্মী গণজমায়েত। বেলা ৩টা থেকে মাগরিবের আগ পর্যন্ত চলবে ‘মার্চ ফর গাজা’ কর্মসূচি।
এ উপলক্ষে উদ্যানে পতাকা, ব্যাজ ও টি-শার্ট বিক্রির ধুম পড়ে গেছে। ফিলিস্তিন পতাকা আকারভেদে ১২০ থেকে ৩০০ টাকায়, ব্যাজ ১০ থেকে ২০ টাকায়, আর টি-শার্ট বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকায়।
সমাবেশে অংশ নিতে আসা নিরব আহমেদ বলেন, “ফিলিস্তিনের জন্য আমাদের এই দাঁড়িয়ে থাকা বড় কিছু। তাই আমি বড় একটি পতাকা কিনেছি—এ যেন এক প্রতীকী প্রতিবাদ।”
আরেক অংশগ্রহণকারী শফিক বলেন, “ফিলিস্তিনের মানুষের যন্ত্রণায় আমি কষ্ট পাই। এই টি-শার্ট আর ব্যাজ পরে মনে হয় আমি নিজেও তাদের একজন।”
সমাবেশে অংশগ্রহণকারীদের মুখে একটাই বার্তা—নিরস্ত্র মানুষের ওপর বর্বরতা চলতে পারে না। ফিলিস্তিনের পাশে দাঁড়ানো শুধু মানবিক দায়িত্বই নয়, এটা ন্যায়ের পক্ষেও অবস্থান নেওয়া।
বিকেলের দিকে সমাবেশ আরও বর্ণাঢ্য ও প্রভাবশালী হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে, যেখানে লাখো কণ্ঠে উচ্চারিত হবে একটিই আহ্বান— “গাজার পাশে দাঁড়ান, নিপীড়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার হোন।”