‘মঙ্গল শোভাযাত্রার’ নাম পরিবর্তন

- আপডেট সময় : ০২:২০:১৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ১৮ বার পড়া হয়েছে

বাংলা নববর্ষের ঐতিহ্যবাহী ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’র নাম বদলে এবার রাখা হয়েছে ‘বর্ষবরণ আনন্দ শোভাযাত্রা’। শুক্রবার (১১ এপ্রিল) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই সিদ্ধান্তের কথা জানান সংশ্লিষ্টরা।
চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক আজহারুল ইসলাম বলেন, “এবারের শোভাযাত্রা হবে সবার জন্য, সবার অংশগ্রহণে। আমরা চাই বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতিগোষ্ঠী ও সমাজের সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ এই আয়োজনে নিজেদের অংশীদার মনে করুক।”
এবারের শোভাযাত্রায় ২৮টি জাতিগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ থাকবে, যা আয়োজনটিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, শোভাযাত্রার এবারের প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে—‘নববর্ষের ঐকতান, ফ্যাসিবাদের অবসান’। প্রতিপাদ্যের মধ্য দিয়ে আবহমান বাংলার সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে তুলে ধরা হবে। একই সঙ্গে অতীতের দুঃসময় পেরিয়ে ভবিষ্যতের জন্য এক স্বস্তির বার্তা ছড়িয়ে দেওয়ারও চেষ্টা থাকবে।
প্রসঙ্গত, আশির দশকে ১৯৮৯ সালে প্রথমবারের মতো সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক হয়ে উঠেছিল পহেলা বৈশাখে চারুকলার উদ্যোগে আয়োজিত এই শোভাযাত্রা। পরে এর নাম হয় ‘মঙ্গল শোভাযাত্রা’। ২০১৬ সালে ইউনেস্কো একে ‘মানবতার ঐতিহ্য’ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়।
পহেলা বৈশাখের সকালে রমনার বটমূলে ছায়ানটের বর্ষবরণ অনুষ্ঠান শেষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে থেকে জাতীয় সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় শোভাযাত্রা। ঢাকের বোল, মুখোশ আর বিশাল পাপেট হাতে মানুষ শাহবাগ মোড় হয়ে শিশুপার্ক ঘুরে আবার টিএসসিতে এসে মিলিত হন।
বিভিন্ন বয়সী মানুষ নানা সাজে এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন, যেখানে একদিকে থাকে উৎসবের রঙ, অন্যদিকে প্রতিবাদের প্রতীকী রূপ—যা নববর্ষকে করে তোলে কেবল একটি উৎসব নয়, বরং একটি বার্তার বাহকও।
এবারের আয়োজনে সেই বার্তা আরও স্পষ্ট: ফ্যাসিবাদের উত্থান যেন আর না ঘটে, ঐক্য আর সংস্কৃতির জয় হোক এই নববর্ষে।