ঢাকা ১০:০৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে

প্রতিনিধি, চট্টগ্রাম
  • আপডেট সময় : ০৯:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুনের মধ্যেই দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সভায় তিনি অর্থপাচার প্রতিরোধ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বর্তমান ব্যাংকিং পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

গভর্নর বলেন, “মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছি। অতীতে তথ্য উপস্থাপনায় কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যার ফলে প্রকৃত চিত্রটি পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত হতো না। আগে দেখা যেত মূল্যস্ফীতি ৯ বা সাড়ে ৯ শতাংশের উপরে যেত না। কিন্তু গত আগস্টে নতুন পদ্ধতিতে হিসাব করলে দেখা যায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি তখন ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। বর্তমানে তা কমে সাড়ে ৮ শতাংশে এসেছে। অর্থাৎ প্রায় ৫-৬ শতাংশ কমে এসেছে, যা আমাদের জন্য সন্তোষজনক অগ্রগতি।”

তিনি আরও জানান, খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমেছে। আগে এটি সাড়ে ১২ শতাংশ ছিল, বর্তমানে তা ৯ শতাংশের কিছুটা উপরে। “এই হারে কমতে থাকলে আমরা জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারব বলে আশা করছি।”

গভর্নর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “জুলাইতে যে তথ্য আসবে, সেখানেই আমরা এর প্রতিফলন দেখতে পাব। ইনশাআল্লাহ আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি আরও কমিয়ে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে চাই। তখন আমরা সুদের হারও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে পারবো।”

বর্তমানে বাংলাদেশে নীতিগত সুদের হার (পলিসি রেট) ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পলিসি রেট পজিটিভ রাখতে হয়—যা বিশ্বের সব দেশেই অনুসরণ করা হয়। অতীতে আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ, অথচ পলিসি রেট ছিল মাত্র সাড়ে ৮ শতাংশ, ফলে বড় গ্যাপ ছিল। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এটি ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হারও কমিয়ে আনা হবে।”

অর্থপাচার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, “বাংলাদেশ অর্থপাচারের দিক থেকে একটি বড় ভিকটিম। দেশের কিছু গোষ্ঠী ও প্রভাবশালী পরিবার ব্যাংকিং খাত ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। সেই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে।”

সভায় তিনি আরও বলেন, “আমাদের নীতি এখন সঠিক পথে এগোচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার স্থিতিশীল রাখা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

জুনের মধ্যে মূল্যস্ফীতি ৭-৮ শতাংশে নেমে আসবে

আপডেট সময় : ০৯:৫৪:০৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

চলতি অর্থবছরের শেষ মাস জুনের মধ্যেই দেশের সামগ্রিক মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশের মধ্যে নেমে আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর।

শুক্রবার (১১ এপ্রিল) বিকেলে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এই আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। সভায় তিনি অর্থপাচার প্রতিরোধ, মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ এবং বর্তমান ব্যাংকিং পরিস্থিতি নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেন।

গভর্নর বলেন, “মূল্যস্ফীতির ক্ষেত্রে আমরা কিছুটা অগ্রগতি অর্জন করেছি। অতীতে তথ্য উপস্থাপনায় কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল, যার ফলে প্রকৃত চিত্রটি পরিষ্কারভাবে প্রতিফলিত হতো না। আগে দেখা যেত মূল্যস্ফীতি ৯ বা সাড়ে ৯ শতাংশের উপরে যেত না। কিন্তু গত আগস্টে নতুন পদ্ধতিতে হিসাব করলে দেখা যায় খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি তখন ছিল সাড়ে ১৪ শতাংশ। বর্তমানে তা কমে সাড়ে ৮ শতাংশে এসেছে। অর্থাৎ প্রায় ৫-৬ শতাংশ কমে এসেছে, যা আমাদের জন্য সন্তোষজনক অগ্রগতি।”

তিনি আরও জানান, খাদ্যবহির্ভূত (নন-ফুড) মূল্যস্ফীতিও কিছুটা কমেছে। আগে এটি সাড়ে ১২ শতাংশ ছিল, বর্তমানে তা ৯ শতাংশের কিছুটা উপরে। “এই হারে কমতে থাকলে আমরা জুন নাগাদ মূল্যস্ফীতি ৭ থেকে ৮ শতাংশে নামিয়ে আনতে পারব বলে আশা করছি।”

গভর্নর আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, “জুলাইতে যে তথ্য আসবে, সেখানেই আমরা এর প্রতিফলন দেখতে পাব। ইনশাআল্লাহ আগামী অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি আরও কমিয়ে ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনতে চাই। তখন আমরা সুদের হারও ধীরে ধীরে কমিয়ে আনতে পারবো।”

বর্তমানে বাংলাদেশে নীতিগত সুদের হার (পলিসি রেট) ১০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে উল্লেখ করে গভর্নর বলেন, “মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে হলে পলিসি রেট পজিটিভ রাখতে হয়—যা বিশ্বের সব দেশেই অনুসরণ করা হয়। অতীতে আমাদের দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ১৪ শতাংশ, অথচ পলিসি রেট ছিল মাত্র সাড়ে ৮ শতাংশ, ফলে বড় গ্যাপ ছিল। আমি দায়িত্ব নেয়ার পর এটি ১০ শতাংশে উন্নীত করা হয়েছে। ভবিষ্যতে মূল্যস্ফীতি কমলে সুদের হারও কমিয়ে আনা হবে।”

অর্থপাচার প্রসঙ্গে গভর্নর বলেন, “বাংলাদেশ অর্থপাচারের দিক থেকে একটি বড় ভিকটিম। দেশের কিছু গোষ্ঠী ও প্রভাবশালী পরিবার ব্যাংকিং খাত ব্যবহার করে বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে পাচার করেছে। সেই অর্থ ফিরিয়ে আনার জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও সংশ্লিষ্ট সংস্থার সঙ্গে সমন্বয়ে কাজ করছে।”

সভায় তিনি আরও বলেন, “আমাদের নীতি এখন সঠিক পথে এগোচ্ছে। মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, সুদের হার স্থিতিশীল রাখা এবং আর্থিক শৃঙ্খলা বজায় রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রতিনিয়ত কাজ করে যাচ্ছে।”