ঢাকা ০১:৩৪ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা

সুপারশপে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ না রাখার হুমকি

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৪:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫ ২৮ বার পড়া হয়েছে

কেএফসিতে ভাঙচুর

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশের মধ্যেই বিভিন্ন দোকান ও সুপারশপে হামলা, ভাঙচুর এবং হুমকির ঘটনা ঘটছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ বিক্রি না করতে চাপ দিচ্ছে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। হুমকি ও ভাঙচুরের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম উদ্বেগে

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কিছু ব্যক্তি দোকানে গিয়ে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ বিক্রি না করার লিফলেট দিচ্ছেন, এমনকি এসব পণ্য সরিয়ে না ফেললে ভাঙচুরের হুমকি দিচ্ছেন। যদিও এসব পণ্যের প্রকৃত উৎস সম্পর্কে অনেক সময় স্পষ্ট তথ্য নেই, তবুও তালিকা ধরে পণ্য সরিয়ে নিচ্ছেন অনেক দোকানি।

ঢাকার ওয়ারী এলাকার একটি সুপারশপের ম্যানেজার জানান, মঙ্গলবার কিছু টিনএজ ছেলে তাদের দোকানে এসে হুমকি দিয়েছে—যদি ইসরায়েলি পণ্য না সরানো হয়, তবে দোকান বন্ধ করে দেবে। শুধু তাদের দোকান নয়, আশপাশের আরও কয়েকটি দোকান ও সুপারশপকেও একইভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

একইসঙ্গে দেখা গেছে, বিদেশি কিন্তু ইসরায়েলি নয়—এমন পণ্যও তালিকাভুক্ত করে সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। ফলে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে বিনিয়োগ করেছেন। এমন হুমকি-ভাঙচুরের ঘটনা তাদের ব্যবসার জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। অনেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে চাইছেন না।

বিষয়টি নিয়ে বাটা বাংলাদেশ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা কোনো ইসরায়েলি কোম্পানি নয় এবং তাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাটার জন্ম চেক রিপাবলিকে এবং এটি একটি পারিবারিক মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, এ ধরনের ঘটনায় এখনো সরাসরি কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সব থানার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, ইতোমধ্যে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র বিশ্লেষণ করে বাকি জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। যারা দোকান ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

উদ্বেগে ব্যবসায়ীরা

সুপারশপে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ না রাখার হুমকি

আপডেট সময় : ০৪:৫৭:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

গাজায় ইসরায়েলি হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে বিক্ষোভ ও সমাবেশের মধ্যেই বিভিন্ন দোকান ও সুপারশপে হামলা, ভাঙচুর এবং হুমকির ঘটনা ঘটছে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ বিক্রি না করতে চাপ দিচ্ছে কিছু ব্যক্তি বা গোষ্ঠী। হুমকি ও ভাঙচুরের আশঙ্কায় ব্যবসায়ীরা পড়েছেন চরম উদ্বেগে

রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে কিছু ব্যক্তি দোকানে গিয়ে ‘ইসরায়েলি পণ্য’ বিক্রি না করার লিফলেট দিচ্ছেন, এমনকি এসব পণ্য সরিয়ে না ফেললে ভাঙচুরের হুমকি দিচ্ছেন। যদিও এসব পণ্যের প্রকৃত উৎস সম্পর্কে অনেক সময় স্পষ্ট তথ্য নেই, তবুও তালিকা ধরে পণ্য সরিয়ে নিচ্ছেন অনেক দোকানি।

ঢাকার ওয়ারী এলাকার একটি সুপারশপের ম্যানেজার জানান, মঙ্গলবার কিছু টিনএজ ছেলে তাদের দোকানে এসে হুমকি দিয়েছে—যদি ইসরায়েলি পণ্য না সরানো হয়, তবে দোকান বন্ধ করে দেবে। শুধু তাদের দোকান নয়, আশপাশের আরও কয়েকটি দোকান ও সুপারশপকেও একইভাবে হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।

একইসঙ্গে দেখা গেছে, বিদেশি কিন্তু ইসরায়েলি নয়—এমন পণ্যও তালিকাভুক্ত করে সরিয়ে নিতে বলা হচ্ছে। ফলে বিভ্রান্তি ও অনিশ্চয়তা আরও বাড়ছে।

ব্যবসায়ীরা বলছেন, তারা দেশের অর্থনীতিতে অবদান রাখতে বিনিয়োগ করেছেন। এমন হুমকি-ভাঙচুরের ঘটনা তাদের ব্যবসার জন্য বড় ঝুঁকি তৈরি করছে। অনেকেই নিরাপত্তার কথা ভেবে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে চাইছেন না।

বিষয়টি নিয়ে বাটা বাংলাদেশ একটি বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা কোনো ইসরায়েলি কোম্পানি নয় এবং তাদের কোনো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নেই। প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাটার জন্ম চেক রিপাবলিকে এবং এটি একটি পারিবারিক মালিকানাধীন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান।

ঢাকা মহানগর পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ জানান, এ ধরনের ঘটনায় এখনো সরাসরি কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলেও পুলিশ সতর্ক রয়েছে। সব থানার অফিসারদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যাতে কেউ বিক্ষোভের সুযোগ নিয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটাতে না পারে।

পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) ইনামুল হক সাগর বলেন, ইতোমধ্যে সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনায় ৪৯ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র বিশ্লেষণ করে বাকি জড়িতদেরও আইনের আওতায় আনা হবে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী জানান, দেশের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সরকারের দায়িত্ব। যারা দোকান ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে এবং ভবিষ্যতে যেন এমন ঘটনা না ঘটে, সে জন্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে।