ঢাকা ০৯:৩১ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিনিয়োগের ইতিহাসসৃষ্টি অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০৬:০৫:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫ ৩৪ বার পড়া হয়েছে

বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত আট মাস ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একটি ইতিহাসসৃষ্টি অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ অংশগ্রহণকারী একদল চীনা বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শ্রম খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের আনা সংস্কারগুলো বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এমন অনুকূল পরিবেশ অতীতে কখনোই দেখা যায়নি।”

তিনি জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগসমূহ শুনে দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে কোরিয়ান ও চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ ‘ব্রেকফাস্ট মিটিং’ আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতি মাসের ১০ তারিখ কোরিয়ান ও চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চেয়ারম্যান।

এই ধারাবাহিক বৈঠকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টাও সরাসরি অংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সমস্যা শুনবেন এবং তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেবেন।

বিনিয়োগকারীদের সেবায় একটি ডেডিকেটেড হটলাইন এবং কল সেন্টার চালুর প্রস্তাব দেন তিনি, যাতে তারা সহজেই অভিযোগ জানাতে পারেন এবং দ্রুত কার্যকর সমাধান পেতে পারেন।

বৈঠকে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য শক্তি, টেক্সটাইল, টেলিযোগাযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ ও আইটি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্রিয় ৩০ জনেরও বেশি চীনা বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্বের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।

সভায় চীনা বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম এবং মোংলায় চীনা অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আধুনিকায়নে চীনের আগ্রহের বিষয়টিও উঠে আসে।

প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক বেইজিং সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি শি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনের কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করেছেন। আমি তার আন্তরিক অঙ্গীকারে মুগ্ধ হয়েছি।”

বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন ও অপারেশন হাবে রূপান্তরের পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করে ইউনূস বলেন, “আমাদের এখানে একটি বড় অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের মতো ল্যান্ডলকড দেশের চাহিদাও আমরা পূরণ করতে পারি।”

কিছু চীনা কোম্পানি বৈদ্যুতিক যানবাহনে রূপান্তর, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন, বায়ু টারবাইন এবং অফশোর সৌর বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এর আগে দিনটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিনিয়োগের ইতিহাসসৃষ্টি অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে

আপডেট সময় : ০৬:০৫:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

বিদেশি বিনিয়োগ সহজ করতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গত আট মাস ধরে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে এবং বর্তমানে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য একটি ইতিহাসসৃষ্টি অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে—এমন মন্তব্য করেছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

মঙ্গলবার (৮ এপ্রিল) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট সামিট ২০২৫-এ অংশগ্রহণকারী একদল চীনা বিনিয়োগকারীর সঙ্গে বৈঠককালে প্রধান উপদেষ্টা এ কথা বলেন।

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও শ্রম খাতে অন্তর্বর্তী সরকারের আনা সংস্কারগুলো বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগের নতুন দ্বার উন্মোচন করেছে। এমন অনুকূল পরিবেশ অতীতে কখনোই দেখা যায়নি।”

তিনি জানান, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের উদ্বেগসমূহ শুনে দ্রুত সমাধানের লক্ষ্যে কোরিয়ান ও চীনা বিনিয়োগকারীদের জন্য একটি বিশেষ ‘ব্রেকফাস্ট মিটিং’ আয়োজন করা হবে। সেই সঙ্গে প্রতি মাসের ১০ তারিখ কোরিয়ান ও চীনা বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে নিয়মিত বৈঠক করবেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) চেয়ারম্যান।

এই ধারাবাহিক বৈঠকে কোনো কোনো ক্ষেত্রে প্রধান উপদেষ্টাও সরাসরি অংশ নিয়ে বিনিয়োগকারীদের সমস্যা শুনবেন এবং তা দ্রুত সমাধানের আশ্বাস দেবেন।

বিনিয়োগকারীদের সেবায় একটি ডেডিকেটেড হটলাইন এবং কল সেন্টার চালুর প্রস্তাব দেন তিনি, যাতে তারা সহজেই অভিযোগ জানাতে পারেন এবং দ্রুত কার্যকর সমাধান পেতে পারেন।

বৈঠকে অবকাঠামো, বিদ্যুৎ, পরিবহন, নবায়নযোগ্য শক্তি, টেক্সটাইল, টেলিযোগাযোগ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা, সরবরাহ ও আইটি খাতসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সক্রিয় ৩০ জনেরও বেশি চীনা বিনিয়োগকারী উপস্থিত ছিলেন। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দেন বিশ্বের অন্যতম বড় প্রতিষ্ঠান মেইনল্যান্ড হেডগিয়ার কোম্পানি লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট পলিন এনগান।

সভায় চীনা বিনিয়োগকারীরা চট্টগ্রাম এবং মোংলায় চীনা অর্থনৈতিক জোনে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিশেষ করে মোংলা সমুদ্রবন্দরকে আধুনিকায়নে চীনের আগ্রহের বিষয়টিও উঠে আসে।

প্রধান উপদেষ্টা তার সাম্প্রতিক বেইজিং সফরে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাতের বিষয়েও আলোকপাত করেন। তিনি বলেন, “রাষ্ট্রপতি শি বাংলাদেশে বিনিয়োগ বাড়াতে চীনের কোম্পানিগুলোকে উৎসাহিত করেছেন। আমি তার আন্তরিক অঙ্গীকারে মুগ্ধ হয়েছি।”

বাংলাদেশকে দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম উৎপাদন ও অপারেশন হাবে রূপান্তরের পরিকল্পনার কথা পুনর্ব্যক্ত করে ইউনূস বলেন, “আমাদের এখানে একটি বড় অভ্যন্তরীণ বাজার রয়েছে। পাশাপাশি নেপাল ও ভুটানের মতো ল্যান্ডলকড দেশের চাহিদাও আমরা পূরণ করতে পারি।”

কিছু চীনা কোম্পানি বৈদ্যুতিক যানবাহনে রূপান্তর, লিথিয়াম-আয়ন ব্যাটারি উৎপাদন, বায়ু টারবাইন এবং অফশোর সৌর বিদ্যুৎ খাতে বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।

এর আগে দিনটিতে দক্ষিণ কোরিয়ার বেশ কয়েকজন বিনিয়োগকারীও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। এ সময় বিডার চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক মাহমুদ বিন হারুন এবং এসডিজি কো-অর্ডিনেটর লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।