ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ফিলিস্তিন নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ৭ গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী

মোঃ মনিরুল ইসলাম
  • আপডেট সময় : ০৩:৪৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ ৫২ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ইসলামের ইতিহাসে শাম অঞ্চল তথা সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ। এই ভূখণ্ড ছিল নবীদের পবিত্র আবাসভূমি, আর ভবিষ্যতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও এখানেই সংঘটিত হবে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। বিশেষ করে বায়তুল মুকাদ্দাস ও এর আশপাশের এলাকা নিয়ে রয়েছে তাঁর কিছু গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী।

১. সত্যের পক্ষে অবিচল একটি দল থাকবে ফিলিস্তিনে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তাঁর উম্মতের একটি দল কেয়ামত পর্যন্ত সত্যের ওপর অটল থাকবে। তারা শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়বে এবং বিজয়ী থাকবে। সাহাবিদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তারা অবস্থান করবে বায়তুল মুকাদ্দাস ও আশপাশের এলাকায়।
📖 সূত্র: বুখারি ৭৩১১, মুসনাদে আহমদ ২২৩২০

২. এটি হবে দ্বিতীয় হিজরতের ভূমি

রাসুল (সা.) বলেন, প্রথম হিজরতের পরে আবার একটি হিজরত হবে। সেই সময়ের সেরা মানুষ হবে তারা, যারা হিজরতের জন্য শাম অঞ্চলে গিয়ে বসতি গড়বে। এটি হবে ইবরাহিম (আ.)-এর হিজরত ভূমি।
📖 সূত্র: আবু দাউদ ২৪৮২

৩. দামেস্কের পাশে হবে মুসলিম বাহিনীর ঘাঁটি

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেন, যুদ্ধের সময়ে মুসলিম বাহিনীর আশ্রয়স্থল হবে গোতা নামক একটি স্থান, যা দামেস্ক শহরের পার্শ্ববর্তী। এটি শামের অন্যতম উৎকৃষ্ট অঞ্চল বলে বর্ণনা করেন তিনি।
📖 সূত্র: আবু দাউদ ৪২৯৮, মুসনাদে আহমদ ১৭৪৭০

৪. ইহুদিদের বিরুদ্ধে হবে মুসলিমদের যুদ্ধ

রাসুল (সা.) বলেন, কেয়ামতের পূর্বে মুসলমানদের ইহুদিদের সঙ্গে যুদ্ধ হবে। ইহুদিরা যখন পাথর ও গাছের আড়ালে লুকাবে, তখন এগুলো বলে দেবে—‘এই যে ইহুদি, এসো তাকে হত্যা করো।’ শুধুমাত্র গারকাদ গাছ তা বলবে না, কারণ তা ইহুদিদের গাছ।
📖 সূত্র: সহিহ মুসলিম ৭০৭৫

৫. সত্য ও বিজয়ের ভূমি হবে ফিলিস্তিন

ফিলিস্তিন সবসময় সত্যের পক্ষে থাকা দলটির ঘাঁটি হয়ে থাকবে। তারা কঠিন সময়েও সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল থাকবে এবং অবশেষে শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করবে।
📖 সূত্র: মুসনাদে আহমদ ২১২৮৬

৬. ঈসা (আ.)-এর অবতরণ ও দাজ্জালের পরাজয় এই ভূখণ্ডে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঈসা (আ.) দামেস্কের পূর্বদিকের উজ্জ্বল মিনারে অবতরণ করবেন। এরপর তিনি লুদ নামক স্থানে গিয়ে দাজ্জালকে পরাজিত ও হত্যা করবেন।
📖 সূত্র: মুসলিম ২৯৩৭

৭. ফিলিস্তিন হবে হাশরের ময়দান

ফিলিস্তিনকে বলা হয়েছে হাশর তথা পুনরুত্থানের জায়গা। রাসুল (সা.) বলেন, এটি এমন স্থান, যেখানে কিয়ামতের সময় মানবজাতি সমবেত হবে। বায়তুল মুকাদ্দাসে নামাজ পড়ার ফজিলতও উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি এক হাজার রাকাতের সমান সওয়াবের অধিকারী।
📖 সূত্র: মুসনাদে আহমদ ২৭৬২৬, সুরা হাশর: ২

ফিলিস্তিন কেবল ঐতিহাসিক কিংবা রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানই নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক ও ভবিষ্যদ্বাণীমূলক ভূমি, যাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হবে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই পবিত্র ভূমির প্রতি মুসলিমদের ভালোবাসা, সম্মান ও দায়িত্ব আজও সমানভাবে অপরিহার্য।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

ফিলিস্তিন নিয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ৭ গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী

আপডেট সময় : ০৩:৪৭:৩২ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

ইসলামের ইতিহাসে শাম অঞ্চল তথা সিরিয়া, জর্ডান, লেবানন ও ঐতিহাসিক ফিলিস্তিন ভীষণ তাৎপর্যপূর্ণ। এই ভূখণ্ড ছিল নবীদের পবিত্র আবাসভূমি, আর ভবিষ্যতের অনেক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাও এখানেই সংঘটিত হবে বলে জানিয়েছেন আমাদের প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)। বিশেষ করে বায়তুল মুকাদ্দাস ও এর আশপাশের এলাকা নিয়ে রয়েছে তাঁর কিছু গভীর ও তাৎপর্যপূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণী।

১. সত্যের পক্ষে অবিচল একটি দল থাকবে ফিলিস্তিনে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, তাঁর উম্মতের একটি দল কেয়ামত পর্যন্ত সত্যের ওপর অটল থাকবে। তারা শত্রুর বিরুদ্ধে সাহসিকতার সঙ্গে লড়বে এবং বিজয়ী থাকবে। সাহাবিদের প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, তারা অবস্থান করবে বায়তুল মুকাদ্দাস ও আশপাশের এলাকায়।
📖 সূত্র: বুখারি ৭৩১১, মুসনাদে আহমদ ২২৩২০

২. এটি হবে দ্বিতীয় হিজরতের ভূমি

রাসুল (সা.) বলেন, প্রথম হিজরতের পরে আবার একটি হিজরত হবে। সেই সময়ের সেরা মানুষ হবে তারা, যারা হিজরতের জন্য শাম অঞ্চলে গিয়ে বসতি গড়বে। এটি হবে ইবরাহিম (আ.)-এর হিজরত ভূমি।
📖 সূত্র: আবু দাউদ ২৪৮২

৩. দামেস্কের পাশে হবে মুসলিম বাহিনীর ঘাঁটি

রাসুলুল্লাহ (সা.) ভবিষ্যদ্বাণী করেন, যুদ্ধের সময়ে মুসলিম বাহিনীর আশ্রয়স্থল হবে গোতা নামক একটি স্থান, যা দামেস্ক শহরের পার্শ্ববর্তী। এটি শামের অন্যতম উৎকৃষ্ট অঞ্চল বলে বর্ণনা করেন তিনি।
📖 সূত্র: আবু দাউদ ৪২৯৮, মুসনাদে আহমদ ১৭৪৭০

৪. ইহুদিদের বিরুদ্ধে হবে মুসলিমদের যুদ্ধ

রাসুল (সা.) বলেন, কেয়ামতের পূর্বে মুসলমানদের ইহুদিদের সঙ্গে যুদ্ধ হবে। ইহুদিরা যখন পাথর ও গাছের আড়ালে লুকাবে, তখন এগুলো বলে দেবে—‘এই যে ইহুদি, এসো তাকে হত্যা করো।’ শুধুমাত্র গারকাদ গাছ তা বলবে না, কারণ তা ইহুদিদের গাছ।
📖 সূত্র: সহিহ মুসলিম ৭০৭৫

৫. সত্য ও বিজয়ের ভূমি হবে ফিলিস্তিন

ফিলিস্তিন সবসময় সত্যের পক্ষে থাকা দলটির ঘাঁটি হয়ে থাকবে। তারা কঠিন সময়েও সত্য ও ন্যায়ের ওপর অবিচল থাকবে এবং অবশেষে শত্রুর বিরুদ্ধে বিজয় অর্জন করবে।
📖 সূত্র: মুসনাদে আহমদ ২১২৮৬

৬. ঈসা (আ.)-এর অবতরণ ও দাজ্জালের পরাজয় এই ভূখণ্ডে

রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ঈসা (আ.) দামেস্কের পূর্বদিকের উজ্জ্বল মিনারে অবতরণ করবেন। এরপর তিনি লুদ নামক স্থানে গিয়ে দাজ্জালকে পরাজিত ও হত্যা করবেন।
📖 সূত্র: মুসলিম ২৯৩৭

৭. ফিলিস্তিন হবে হাশরের ময়দান

ফিলিস্তিনকে বলা হয়েছে হাশর তথা পুনরুত্থানের জায়গা। রাসুল (সা.) বলেন, এটি এমন স্থান, যেখানে কিয়ামতের সময় মানবজাতি সমবেত হবে। বায়তুল মুকাদ্দাসে নামাজ পড়ার ফজিলতও উল্লেখ করে তিনি বলেন, এটি এক হাজার রাকাতের সমান সওয়াবের অধিকারী।
📖 সূত্র: মুসনাদে আহমদ ২৭৬২৬, সুরা হাশর: ২

ফিলিস্তিন কেবল ঐতিহাসিক কিংবা রাজনৈতিক গুরুত্বপূর্ণ স্থানই নয়, বরং এটি একটি আধ্যাত্মিক ও ভবিষ্যদ্বাণীমূলক ভূমি, যাকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হবে বহু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই পবিত্র ভূমির প্রতি মুসলিমদের ভালোবাসা, সম্মান ও দায়িত্ব আজও সমানভাবে অপরিহার্য।