ঢাকা ০১:৫২ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নরসিংদীতে পুলিশের বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

প্রতিনিধি, নরসিংদী
  • আপডেট সময় : ০৭:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ ৩৯ বার পড়া হয়েছে

অভিযুক্ত দুই পুলিশ কর্মকর্তা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

নরসিংদীতে উদ্ধার করা ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

সোমবার (৭ এপ্রিল) নরসিংদী পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহকে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার একটি লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী মাদকদ্রব্য আদালতে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে গোপনে তা বিক্রি করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডিবি ওসি মো. কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন মিলে এসব গাঁজা স্থানীয় এক পরিচিত মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন, যার মোট মূল্য প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্তদের নরসিংদী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয় এবং পরে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে বদলি করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আদালত থেকে গাঁজা ধ্বংসের নির্দেশ থাকলেও, বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। বরং আদালতের নথিতে দেখানো হয়েছে—মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়েছে, যা তদন্তে অসত্য প্রমাণিত হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত ডিবি ওসি কামরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “আমার অফিসার গাঁজা জব্দ করেছে এবং যথাযথভাবে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। আদালত যদি ধ্বংস করেছে বলে নথি দেয়, সেটা তো ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব।” তিনি নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, “আলামত আমার মাধ্যমে যায়নি। দায়িত্বে ছিলাম বলেই হয়তো বলির পাঠা বানানো হয়েছে, কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি।”

নরসিংদী পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই নেওয়া হবে।”

নিউজটি শেয়ার করুন

One thought on “নরসিংদীতে পুলিশের বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

নরসিংদীতে পুলিশের বিরুদ্ধে ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির প্রমাণ মিলেছে

আপডেট সময় : ০৭:৪০:৩৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

নরসিংদীতে উদ্ধার করা ৯৬ কেজি গাঁজা বিক্রির ঘটনায় জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ওসি মো. কামরুজ্জামানসহ ছয় পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে প্রাথমিক অপরাধ প্রমাণিত হয়েছে বলে জানিয়েছে তদন্ত কমিটি।

সোমবার (৭ এপ্রিল) নরসিংদী পুলিশ কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার মো. আব্দুল হান্নান জানান, এ ঘটনায় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. কলিমুল্লাহকে এক সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছিল। দীর্ঘ তদন্ত শেষে জমা দেওয়া প্রতিবেদনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে।

তদন্তে উঠে এসেছে, ২০২৪ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি শিবপুর উপজেলার একটি লটকন বাগান থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় ৯৬ কেজি গাঁজা উদ্ধার করা হয়। নিয়ম অনুযায়ী মাদকদ্রব্য আদালতে জমা দেওয়ার কথা থাকলেও তা না করে গোপনে তা বিক্রি করা হয়। অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ডিবি ওসি মো. কামরুজ্জামান ও কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন মিলে এসব গাঁজা স্থানীয় এক পরিচিত মাদক ব্যবসায়ী মায়া প্রধানের কাছে ১৫ হাজার টাকা কেজি দরে বিক্রি করেন, যার মোট মূল্য প্রায় ১৪ লাখ ৪০ হাজার টাকা।

ঘটনাটি জানাজানি হলে অভিযুক্তদের নরসিংদী পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করা হয় এবং পরে ঢাকার রেঞ্জ অফিসে বদলি করা হয়।

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, আদালত থেকে গাঁজা ধ্বংসের নির্দেশ থাকলেও, বাস্তবে তা কার্যকর হয়নি। বরং আদালতের নথিতে দেখানো হয়েছে—মাদকদ্রব্য ধ্বংস করা হয়েছে, যা তদন্তে অসত্য প্রমাণিত হয়েছে।

তবে অভিযুক্ত ডিবি ওসি কামরুজ্জামান অভিযোগ অস্বীকার করে দাবি করেন, “আমার অফিসার গাঁজা জব্দ করেছে এবং যথাযথভাবে কোর্টে পাঠানো হয়েছে। আদালত যদি ধ্বংস করেছে বলে নথি দেয়, সেটা তো ম্যাজিস্ট্রেটের দায়িত্ব।” তিনি নিজেকে ষড়যন্ত্রের শিকার বলেও উল্লেখ করেন।

অপরদিকে, কোর্ট পুলিশের ওসি খন্দকার জাকির হোসেন বলেন, “আলামত আমার মাধ্যমে যায়নি। দায়িত্বে ছিলাম বলেই হয়তো বলির পাঠা বানানো হয়েছে, কিন্তু আমি কোনো অন্যায় করিনি।”

নরসিংদী পুলিশ সুপার বলেন, “তদন্ত রিপোর্টে প্রাথমিকভাবে অপরাধের প্রমাণ মিলেছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে, পরবর্তী সিদ্ধান্ত সেখান থেকেই নেওয়া হবে।”