ঢাকা ০৮:২৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আরও ১০০ মার্কিন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১০:৩১:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫ ৪২ বার পড়া হয়েছে

বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আরও ১০০টি মার্কিন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (USTR) দপ্তরে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করেছে।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র অতীতে বাংলাদেশকে দেওয়া অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার করায়, বর্তমানে দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড় শুল্ক হার মাত্র ৬.১০ শতাংশ। বিশেষভাবে কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ওপর শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও এক শতাংশ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ তুলা আমদানিকারক, যা মূলত তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এ অবস্থায় ভারসাম্য আনতে বর্তমানে শূন্য শুল্ক তালিকায় থাকা ১৯০টি পণ্যের পাশাপাশি আরও ১০০টি মার্কিন পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত টিকফা (TICFA) চুক্তির আলোকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আমদানি নীতিমালা হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা নিশ্চিতসহ নানা সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটোমোবাইল কোম্পানির জন্য বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব এবং কৃষিপণ্য আমদানিতে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, এসব পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারস্য আনবে এবং দুই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি এবং ড. ইউনূস যৌথভাবে ইউএসটিআর’র সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকটির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণায় বিশ্ববাজারে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠানো হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

আরও ১০০ মার্কিন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেবে বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ১০:৩১:০০ অপরাহ্ন, সোমবার, ৭ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি কমাতে এবং দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক জোরদারে আরও ১০০টি মার্কিন পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ।

সোমবার (৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধির (USTR) দপ্তরে পাঠানো এক চিঠিতে এ তথ্য জানান প্রধানমন্ত্রীর বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে এই খবর নিশ্চিত করেছে।

এর আগে, যুক্তরাষ্ট্রের আরোপিত ৩৭ শতাংশ পাল্টা শুল্ক তিন মাসের জন্য স্থগিত করার অনুরোধ জানিয়ে দেশটির প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে চিঠি দিয়েছিলেন প্রধান উপদেষ্টা ও নোবেলজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যুক্তরাষ্ট্র অতীতে বাংলাদেশকে দেওয়া অগ্রাধিকারমূলক বাণিজ্য সুবিধা প্রত্যাহার করায়, বর্তমানে দেশটির বাজারে বাংলাদেশি পণ্যের ওপর গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হচ্ছে। অন্যদিকে, বাংলাদেশে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যের ওপর গড় শুল্ক হার মাত্র ৬.১০ শতাংশ। বিশেষভাবে কাঁচা তুলা ও লোহার স্ক্র্যাপের ওপর শুল্ক হার যথাক্রমে শূন্য ও এক শতাংশ।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম বৃহৎ তুলা আমদানিকারক, যা মূলত তৈরি পোশাক শিল্পে ব্যবহৃত হয়। এ অবস্থায় ভারসাম্য আনতে বর্তমানে শূন্য শুল্ক তালিকায় থাকা ১৯০টি পণ্যের পাশাপাশি আরও ১০০টি মার্কিন পণ্যকে শুল্কমুক্ত সুবিধার আওতায় আনার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।

এছাড়া ২০১৩ সালের ২৫ নভেম্বর স্বাক্ষরিত টিকফা (TICFA) চুক্তির আলোকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্র যৌথভাবে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলেও চিঠিতে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ ইতোমধ্যে আমদানি নীতিমালা হালনাগাদ, কাস্টমস প্রক্রিয়া সহজীকরণ, মেধাস্বত্ব সংরক্ষণ, ট্রেডমার্ক ও পেটেন্ট সুরক্ষা নিশ্চিতসহ নানা সংস্কারমূলক পদক্ষেপ নিয়েছে। পাশাপাশি, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি এলএনজি চুক্তি, মার্কিন অটোমোবাইল কোম্পানির জন্য বাংলাদেশে কারখানা স্থাপনের প্রস্তাব এবং কৃষিপণ্য আমদানিতে বেসরকারি উদ্যোগকে উৎসাহিত করার বিষয়েও উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

চিঠিতে বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, এসব পদক্ষেপ দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্যে ভারস্য আনবে এবং দুই দেশের জনগণের জীবনমান উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। তিনি এবং ড. ইউনূস যৌথভাবে ইউএসটিআর’র সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান।

প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিশ্বের যেসব দেশের সঙ্গে বাণিজ্য ঘাটতি রয়েছে, তাদের মধ্যে কয়েকটির ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করেন। বাংলাদেশি পণ্যের ওপর আরোপিত ৩৭ শতাংশ শুল্কের ঘোষণায় বিশ্ববাজারে আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দুইটি গুরুত্বপূর্ণ চিঠি পাঠানো হয়।