ঢাকা ০১:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

অর্থনৈতিক প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ০২:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫ ৩২ বার পড়া হয়েছে

প্রধান উপদেষ্টা

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকটি রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হবে।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা ছাড়াও দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ বা পাল্টা শুল্ক নীতির আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য হওয়ায়, এই সিদ্ধান্ত দেশের তৈরি পোশাক ও অন্যান্য প্রধান রপ্তানি খাতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আজকের বৈঠকে মার্কিন সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অভিঘাত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান, এবং কৌশলগত দিক নিয়ে আলোচনা হবে। একই সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখার বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের একতরফা শুল্ক নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষ করে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর বাজারে পণ্য রপ্তানির ওপর বেশি নির্ভরশীল, তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করাসহ দেশের রপ্তানিখাতকে বহুমুখীকরণের উদ্যোগও বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।

উল্লেখ্য, এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক থাকলেও, নতুন সিদ্ধান্তে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান দুর্বল হবে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০.১৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ৭.৫৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, এবং আমদানি করেছে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।

এই রপ্তানির মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে ৭.৪৩ বিলিয়ন ডলার। বাকি অংশ এসেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, ওষুধ, কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য খাত থেকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

সন্ধ্যায় জরুরি বৈঠক ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা

আপডেট সময় : ০২:৫৪:২০ অপরাহ্ন, শনিবার, ৫ এপ্রিল ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের নতুন শুল্ক নীতির প্রেক্ষিতে দেশের অর্থনীতিতে সম্ভাব্য প্রভাব মোকাবিলায় আজ শনিবার (৫ এপ্রিল) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় জরুরি বৈঠক আহ্বান করেছেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বৈঠকটি রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় অনুষ্ঠিত হবে।

বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি জানান, বৈঠকে উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা ছাড়াও দেশের শীর্ষ অর্থনীতিবিদ, বাণিজ্য ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।

সম্প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘রিসিপ্রোকাল ট্যারিফ’ বা পাল্টা শুল্ক নীতির আওতায় বাংলাদেশি পণ্যের ওপর ৩৭ শতাংশ আমদানি শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন। যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের অন্যতম বৃহৎ রপ্তানি গন্তব্য হওয়ায়, এই সিদ্ধান্ত দেশের তৈরি পোশাক ও অন্যান্য প্রধান রপ্তানি খাতের ওপর বড় ধরনের প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।

আজকের বৈঠকে মার্কিন সিদ্ধান্তের সম্ভাব্য অর্থনৈতিক অভিঘাত, আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে বাংলাদেশের অবস্থান, এবং কৌশলগত দিক নিয়ে আলোচনা হবে। একই সঙ্গে কূটনৈতিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনার পথ খোলা রাখার বিষয়েও সিদ্ধান্ত আসতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এ ধরনের একতরফা শুল্ক নীতি শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা দক্ষিণ এশিয়ার রপ্তানি বাণিজ্যের জন্য উদ্বেগজনক। বিশেষ করে যেসব দেশ যুক্তরাষ্ট্রনির্ভর বাজারে পণ্য রপ্তানির ওপর বেশি নির্ভরশীল, তাদের জন্য এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ।

সরকারি সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে দ্রুত যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্য প্রতিনিধি ও পররাষ্ট্র দপ্তরের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক যোগাযোগ শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে। একই সঙ্গে বিকল্প বাজার খুঁজে বের করাসহ দেশের রপ্তানিখাতকে বহুমুখীকরণের উদ্যোগও বৈঠকে আলোচিত হতে পারে।

উল্লেখ্য, এতদিন যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের পণ্যে গড়ে ১৫ শতাংশ শুল্ক থাকলেও, নতুন সিদ্ধান্তে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ শতাংশে। রপ্তানিকারকরা বলছেন, এতে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক অবস্থান দুর্বল হবে। বিশেষ করে তৈরি পোশাক খাত সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে, কারণ বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৮ শতাংশই যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে যায়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুসারে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশ-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ১০.১৩ বিলিয়ন ডলার। এর মধ্যে বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে রপ্তানি করেছে ৭.৫৯ বিলিয়ন ডলারের পণ্য, এবং আমদানি করেছে ২.৫৩ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পণ্য।

এই রপ্তানির মধ্যে তৈরি পোশাক খাত থেকেই এসেছে ৭.৪৩ বিলিয়ন ডলার। বাকি অংশ এসেছে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য, চামড়ার জুতা, ওষুধ, কৃষিপণ্যসহ অন্যান্য খাত থেকে।