ঢাকা ১২:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শেখ হাসিনার উসকানি ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছেন নেতাকর্মীরা

মোঃ মনিরুল ইসলাম
  • আপডেট সময় : ০২:১৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫ ৩৩ বার পড়া হয়েছে

শেখ হাসিনা (ফাইল ফটো)

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

ভারতে অবস্থান করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে নামতে নির্দেশ দিচ্ছেন। সম্প্রতি পাওয়া একটি ফোনালাপে দেখা গেছে, তিনি দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুনরুদ্ধারে কঠোর ও সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, “এত বড় বড় কথা বলো, অথচ এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধার করতে পারলা না। ৫০ থেকে ১০০ জন লোকও যদি সেখানে যাও, তোমাদের কি মেরে কেটে শেষ করে দেবে। একদিকে লাখ লাখ লোক ঢাকায় আনার কথা বলো। আর ওদিকে একটা অফিস উদ্ধার করতে পার না। যা পারবা, তাই বলবা। প্র্যাকটিক্যাল কথা বলবা। যে কোনো মূল্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধার করতে হবে। এটাই আমার শেষ কথা।”

তিনি আরও বলেন, “এরপর থেকে আর ছোট ছোট কিংবা বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল করার দরকার নেই। যখনই নামবা, বড় আকারে মিছিল নিয়ে নামবা। বেশি লোকজন নিয়ে বড় মিছিল করবা। সামনে এক গ্রুপ থাকবে, পেছনে থাকবে আরেক গ্রুপ। কেউ হামলা করতে এলে পালটা হামলা চালিয়ে তাদেরকে চরম শিক্ষা দিতে হবে।”

দলীয় সভানেত্রীর এমন নির্দেশনায় প্রতিক্রিয়াশীল ও ক্ষোভের মনোভাব দেখা গেছে অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা দেশ আমারকে বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, কেউ হয়তো এ মুহূর্তে ভয়ে বা অন্য কোনো কারণে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলবেন না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দলের অনেক নেতাকর্মী ওনার ওপর চরম ক্ষুব্ধ। কারণ, ওনার এবং ওনার আশপাশে থাকা কিছু হাইব্রিড আওয়ামী লীগারের ভুল- লোভের কারণে আজ দলের এ চরম পরিণতি দেখা দিয়েছে।”

তারা আরও বলেন, “তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যদের তো কিছুই হয়নি। তারা তো ভালোই আছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো—তিনি কীভাবে দেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে বিপদের মধ্যে রেখে এভাবে পালিয়ে যেতে পারলেন? তাকে যারা ১৫ বছরে বিপথগামী করেছেন, দুহাতে লুটপাট ও দুর্নীতি করেছেন; তাদের অনেকে তার মতো বিদেশে পালিয়ে গেছেন। অথচ খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নেতাকর্মীদের। ফলে তার মতো পলাতক নেত্রীর কথায় কেউ আর মাঠে নামবে না। বরং ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ করব কি না এবং করলে কীভাবে, কাদের নেতৃত্বে কোন আওয়ামী লীগ করব—সেটিই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়।”

নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (ফাইল ফটো)
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (ফাইল ফটো)

ফোনালাপে যুবলীগের পলাতক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আরও শোনা যায়। শাওন বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধারে পরিকল্পনা করেছিলাম। পরে নানা কারণে এই পরিকল্পনা বন্ধ করা হয়েছে। দলের কেউ কেউ বলেছে, এখন সময় না। সময় এলে তখন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। তারপরও আপনি যখন বলছেন, আমি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। … আপনার নির্দেশে আশা করি শুধু ভোলা থেকেই ২০ লাখ মানুষ ঢাকায় সমবেত হবে। আপনার যখনই প্রয়োজন হবে, যখনই ডাক দেবেন; আপনার তাৎক্ষণিক ডাকে আমরা ভোলা থেকে তিন থেকে চার লাখ লোক ঢাকায় সমবেত হব।”

“আমি আর কথা বাড়াব না। আপনার কথা সবাই শুনবে। সবাই অপেক্ষায় আছে। আপনাকে অনেক অনেক সালাম।”

শেখ হাসিনা কথোপকথনে আরও বলেন, “কেউ কাউকে খাওয়াইয়া দেবে না। নিজেরটা নিজেরই অর্জন করতে হবে।”

এছাড়াও তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বলেন, “ড. ইউনূস সব জায়গায় মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। সারা দিন সে মিথ্যা কথা বলছে। তার সময়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের বাড়িঘরে হামলা এবং ভাঙচুর চালানো হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করো। যেখানে যেখানে বাড়িঘর ভাঙা হইছে, তাদের বাড়িঘরের ছবি তোল, তাদের বক্তব্য ভিডিও করো। তাদের পক্ষ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে মামলা করার উদ্যোগ নাও।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ফাইল ফটো)
ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ফাইল ফটো)

জবাবে শাওন বলেন, “কিছু কিছু কাজ আমরা ইতোমধ্যে করেছি। নিহতদের তালিকা তৈরি করেছি। যাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কিছু কিছু ছবি তুলেছি। নির্যাতিতদের বক্তব্য ভিডিও করেছি। এ কাজটি অব্যাহত আছে।”

তখন শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু কিছু না। সবার তালিকা তৈরি করতে হবে। নেতাকর্মীদের এখন থেকেই মাঠে নামতে হবে।”

এই ঘটনায় গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারসহ আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে যেসব বাণী দিচ্ছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতারা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সেফ হোমে আরাম আয়েশেই আছেন। তাদের হাতে টাকাপয়সারও অভাব নেই। নিজেদের সুখের জীবন নিশ্চিত করে বিদেশে থেকেই দেশে থাকা নেতাকর্মীদের নতুন করে উসকানি দিচ্ছেন। একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি কিংবা একটি দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা পরিবারের জন্য তারা কেন নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন?”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ যেভাবে রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে, আমার মনে হয় না সেভাবে তাদের আর ফেরার সুযোগ আছে। চোরাগোপ্তা হামলা, ঝটিকা মিছিল-মিটিং করে রাজনীতিতে ফিরে আসা যাবে না। … সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, দলীয়করণ, অর্থ পাচার, খুন-গুম-অপহরণ নিয়ে আওয়ামী লীগ এখনো অনুতপ্ত না। বরং তারা তাদের শাসনামলকেই নানাভাবে গ্লোরিফাই করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিশাল গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা ভারত চলে যান। সেই থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন। মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে চলেছেন, যার মধ্যে রাজপথে নামা ও বর্তমান সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়ার কথাও রয়েছে। এই ফোনালাপগুলো মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

শেখ হাসিনার উসকানি ঘিরে ক্ষোভে ফুঁসছেন নেতাকর্মীরা

আপডেট সময় : ০২:১৬:১০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

ভারতে অবস্থান করা সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ফের দলীয় নেতাকর্মীদের রাজপথে নামতে নির্দেশ দিচ্ছেন। সম্প্রতি পাওয়া একটি ফোনালাপে দেখা গেছে, তিনি দলীয় কেন্দ্রীয় কার্যালয় পুনরুদ্ধারে কঠোর ও সংঘবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

ফোনালাপে শেখ হাসিনা বলেন, “এত বড় বড় কথা বলো, অথচ এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধার করতে পারলা না। ৫০ থেকে ১০০ জন লোকও যদি সেখানে যাও, তোমাদের কি মেরে কেটে শেষ করে দেবে। একদিকে লাখ লাখ লোক ঢাকায় আনার কথা বলো। আর ওদিকে একটা অফিস উদ্ধার করতে পার না। যা পারবা, তাই বলবা। প্র্যাকটিক্যাল কথা বলবা। যে কোনো মূল্যে কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধার করতে হবে। এটাই আমার শেষ কথা।”

তিনি আরও বলেন, “এরপর থেকে আর ছোট ছোট কিংবা বিক্ষিপ্তভাবে মিছিল করার দরকার নেই। যখনই নামবা, বড় আকারে মিছিল নিয়ে নামবা। বেশি লোকজন নিয়ে বড় মিছিল করবা। সামনে এক গ্রুপ থাকবে, পেছনে থাকবে আরেক গ্রুপ। কেউ হামলা করতে এলে পালটা হামলা চালিয়ে তাদেরকে চরম শিক্ষা দিতে হবে।”

দলীয় সভানেত্রীর এমন নির্দেশনায় প্রতিক্রিয়াশীল ও ক্ষোভের মনোভাব দেখা গেছে অনেক নেতাকর্মীর মধ্যে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের কয়েকজন জ্যেষ্ঠ নেতা দেশ আমারকে বলেন, “সত্যি কথা বলতে কী, কেউ হয়তো এ মুহূর্তে ভয়ে বা অন্য কোনো কারণে প্রকাশ্যে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে কথা বলবেন না। কিন্তু ৫ আগস্টের পর দলের অনেক নেতাকর্মী ওনার ওপর চরম ক্ষুব্ধ। কারণ, ওনার এবং ওনার আশপাশে থাকা কিছু হাইব্রিড আওয়ামী লীগারের ভুল- লোভের কারণে আজ দলের এ চরম পরিণতি দেখা দিয়েছে।”

তারা আরও বলেন, “তিনি এবং তার পরিবারের সদস্যদের তো কিছুই হয়নি। তারা তো ভালোই আছেন। কিন্তু প্রশ্ন হলো—তিনি কীভাবে দেশের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে বিপদের মধ্যে রেখে এভাবে পালিয়ে যেতে পারলেন? তাকে যারা ১৫ বছরে বিপথগামী করেছেন, দুহাতে লুটপাট ও দুর্নীতি করেছেন; তাদের অনেকে তার মতো বিদেশে পালিয়ে গেছেন। অথচ খেসারত দিতে হচ্ছে সাধারণ নেতাকর্মীদের। ফলে তার মতো পলাতক নেত্রীর কথায় কেউ আর মাঠে নামবে না। বরং ভবিষ্যতে আওয়ামী লীগ করব কি না এবং করলে কীভাবে, কাদের নেতৃত্বে কোন আওয়ামী লীগ করব—সেটিই এখন প্রধান বিবেচ্য বিষয়।”

নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (ফাইল ফটো)
নুরুন্নবী চৌধুরী শাওন (ফাইল ফটো)

ফোনালাপে যুবলীগের পলাতক প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং সাবেক সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী শাওনের সঙ্গে শেখ হাসিনার কথোপকথনে আরও শোনা যায়। শাওন বলেন, “আমরা কেন্দ্রীয় কার্যালয়টি উদ্ধারে পরিকল্পনা করেছিলাম। পরে নানা কারণে এই পরিকল্পনা বন্ধ করা হয়েছে। দলের কেউ কেউ বলেছে, এখন সময় না। সময় এলে তখন এই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হবে। তারপরও আপনি যখন বলছেন, আমি এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেব। … আপনার নির্দেশে আশা করি শুধু ভোলা থেকেই ২০ লাখ মানুষ ঢাকায় সমবেত হবে। আপনার যখনই প্রয়োজন হবে, যখনই ডাক দেবেন; আপনার তাৎক্ষণিক ডাকে আমরা ভোলা থেকে তিন থেকে চার লাখ লোক ঢাকায় সমবেত হব।”

“আমি আর কথা বাড়াব না। আপনার কথা সবাই শুনবে। সবাই অপেক্ষায় আছে। আপনাকে অনেক অনেক সালাম।”

শেখ হাসিনা কথোপকথনে আরও বলেন, “কেউ কাউকে খাওয়াইয়া দেবে না। নিজেরটা নিজেরই অর্জন করতে হবে।”

এছাড়াও তিনি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে নিয়ে বলেন, “ড. ইউনূস সব জায়গায় মিথ্যা কথা বলে বেড়াচ্ছে। সারা দিন সে মিথ্যা কথা বলছে। তার সময়ে আওয়ামী লীগের যেসব নেতাকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে, যাদের বাড়িঘরে হামলা এবং ভাঙচুর চালানো হয়েছে, তাদের তালিকা তৈরি করো। যেখানে যেখানে বাড়িঘর ভাঙা হইছে, তাদের বাড়িঘরের ছবি তোল, তাদের বক্তব্য ভিডিও করো। তাদের পক্ষ থেকে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল কোর্টে মামলা করার উদ্যোগ নাও।”

ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ফাইল ফটো)
ড. মুহাম্মদ ইউনূস (ফাইল ফটো)

জবাবে শাওন বলেন, “কিছু কিছু কাজ আমরা ইতোমধ্যে করেছি। নিহতদের তালিকা তৈরি করেছি। যাদের বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে, জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কিছু কিছু ছবি তুলেছি। নির্যাতিতদের বক্তব্য ভিডিও করেছি। এ কাজটি অব্যাহত আছে।”

তখন শেখ হাসিনা বলেন, “কিছু কিছু না। সবার তালিকা তৈরি করতে হবে। নেতাকর্মীদের এখন থেকেই মাঠে নামতে হবে।”

এই ঘটনায় গণতন্ত্র মঞ্চের শীর্ষ নেতা ও বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “শেখ হাসিনা এবং তার পরিবারসহ আওয়ামী লীগের বেশির ভাগ নেতা বিদেশে নিরাপদ আশ্রয়ে থেকে যেসব বাণী দিচ্ছেন, তা সত্যিই দুঃখজনক। শেখ হাসিনা এবং তার দলের নেতারা ভারতসহ বিভিন্ন দেশে সেফ হোমে আরাম আয়েশেই আছেন। তাদের হাতে টাকাপয়সারও অভাব নেই। নিজেদের সুখের জীবন নিশ্চিত করে বিদেশে থেকেই দেশে থাকা নেতাকর্মীদের নতুন করে উসকানি দিচ্ছেন। একজন দুর্নীতিবাজ ব্যক্তি কিংবা একটি দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা পরিবারের জন্য তারা কেন নিজেদের জীবন ঝুঁকির মধ্যে ফেলবেন?”

তিনি আরও বলেন, “আওয়ামী লীগ যেভাবে রাজনীতিতে ফেরার চেষ্টা করছে, আমার মনে হয় না সেভাবে তাদের আর ফেরার সুযোগ আছে। চোরাগোপ্তা হামলা, ঝটিকা মিছিল-মিটিং করে রাজনীতিতে ফিরে আসা যাবে না। … সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, দুর্নীতি, লুটপাট, দলীয়করণ, অর্থ পাচার, খুন-গুম-অপহরণ নিয়ে আওয়ামী লীগ এখনো অনুতপ্ত না। বরং তারা তাদের শাসনামলকেই নানাভাবে গ্লোরিফাই করার অপচেষ্টা করে যাচ্ছে, যা সত্যিই দুঃখজনক।”

প্রসঙ্গত, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার বিশাল গণ-অভ্যুত্থানের মুখে ক্ষমতা হারিয়ে শেখ হাসিনা ভারত চলে যান। সেই থেকে তিনি দিল্লিতে অবস্থান করছেন। মাঝেমধ্যে মোবাইল ফোনে দলের নেতাকর্মীদের বিভিন্ন দিকনির্দেশনা দিয়ে চলেছেন, যার মধ্যে রাজপথে নামা ও বর্তমান সরকারবিরোধী কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়ার কথাও রয়েছে। এই ফোনালাপগুলো মাঝেমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়ে যাচ্ছে।