ঢাকা ০৯:০৭ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫, ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বিমসটেক সম্মেলনে আলোচিত প্রধান বিষয়

সিনিয়র প্রতিবেদক
  • আপডেট সময় : ১১:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫ ৪১ বার পড়া হয়েছে

বিমসটেক সম্মেলন

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)-এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলন শেষে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ৮:৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা দেন।

ইউনূস-মোদির সাক্ষাৎ ও আলোচনা

সম্মেলনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। শুক্রবার দুপুর ১২টায় ব্যাংককের সাংগ্রিলা হোটেলে দুই নেতার মধ্যে ৪০ মিনিটব্যাপী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে বাস্তবভিত্তিক ও গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। মোদি আহ্বান জানান, পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন বক্তব্য পরিহার করতে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা, গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি, এবং ভারতে বসে তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ জানান।

মোদি-ইউনূসের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এ সময় তিনি মোদির এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই মনোভাব থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরিখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও অধ্যাপক ইউনূসের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি (মোদি)। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আরও আহ্বান জানিয়েছেন, পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো বক্তব্য পরিহার করাই সর্বোত্তম।’

সম্মেলনের অন্য উল্লেখযোগ্য দিকগুলো:

নৈশভোজে অংশগ্রহণ: ইউনূস, মোদি, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন, যা পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে ওঠে।

ব্যাংকক ঘোষণাপত্র ও ভিশন: সদস্য রাষ্ট্রগুলো যৌথভাবে ‘ব্যাংকক ঘোষণা’ এবং ‘বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন’ গ্রহণ করে, যা টেকসই উন্নয়ন ও গভীর অর্থনৈতিক সংহতির রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।

সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য ও ভ্রমণ সহজতর করতে বিমসটেক দেশগুলো একটি সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের পক্ষে এতে সই করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

চেয়ারম্যানশিপ গ্রহণ: আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও অবস্থান: ইউনূস তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) ও পরিবহন সংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিমসটেককে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

বিমসটেক সম্মেলনে আলোচিত প্রধান বিষয়

আপডেট সময় : ১১:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)-এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলন শেষে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ৮:৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা দেন।

ইউনূস-মোদির সাক্ষাৎ ও আলোচনা

সম্মেলনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। শুক্রবার দুপুর ১২টায় ব্যাংককের সাংগ্রিলা হোটেলে দুই নেতার মধ্যে ৪০ মিনিটব্যাপী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে বাস্তবভিত্তিক ও গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। মোদি আহ্বান জানান, পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন বক্তব্য পরিহার করতে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা, গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি, এবং ভারতে বসে তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ জানান।

মোদি-ইউনূসের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এ সময় তিনি মোদির এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘এই মনোভাব থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরিখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও অধ্যাপক ইউনূসের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি (মোদি)। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আরও আহ্বান জানিয়েছেন, পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো বক্তব্য পরিহার করাই সর্বোত্তম।’

সম্মেলনের অন্য উল্লেখযোগ্য দিকগুলো:

নৈশভোজে অংশগ্রহণ: ইউনূস, মোদি, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন, যা পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে ওঠে।

ব্যাংকক ঘোষণাপত্র ও ভিশন: সদস্য রাষ্ট্রগুলো যৌথভাবে ‘ব্যাংকক ঘোষণা’ এবং ‘বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন’ গ্রহণ করে, যা টেকসই উন্নয়ন ও গভীর অর্থনৈতিক সংহতির রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।

সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য ও ভ্রমণ সহজতর করতে বিমসটেক দেশগুলো একটি সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের পক্ষে এতে সই করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।

চেয়ারম্যানশিপ গ্রহণ: আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।

বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও অবস্থান: ইউনূস তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) ও পরিবহন সংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিমসটেককে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।