বিমসটেক সম্মেলনে আলোচিত প্রধান বিষয়

- আপডেট সময় : ১১:০৮:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৪ এপ্রিল ২০২৫ ৪১ বার পড়া হয়েছে

থাইল্যান্ডের ব্যাংককে অনুষ্ঠিত বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টিসেক্টরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো-অপারেশন (বিমসটেক)-এর ষষ্ঠ শীর্ষ সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সম্মেলন শেষে শুক্রবার (৪ এপ্রিল) রাত ৮:৪৫ মিনিটে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইটে তিনি দেশের উদ্দেশে রওনা দেন।
ইউনূস-মোদির সাক্ষাৎ ও আলোচনা
সম্মেলনের সবচেয়ে আলোচিত বিষয় ছিল প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দ্বিপাক্ষিক বৈঠক। শুক্রবার দুপুর ১২টায় ব্যাংককের সাংগ্রিলা হোটেলে দুই নেতার মধ্যে ৪০ মিনিটব্যাপী এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
বৈঠকে দুই দেশের সম্পর্ক উন্নয়নে বাস্তবভিত্তিক ও গঠনমূলক পদক্ষেপ নেওয়ার বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়। মোদি আহ্বান জানান, পরিবেশ নষ্ট হতে পারে এমন বক্তব্য পরিহার করতে। প্রধান উপদেষ্টা ইউনূস সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ, সীমান্ত হত্যা, গঙ্গা ও তিস্তা চুক্তি, এবং ভারতে বসে তাঁর উসকানিমূলক বক্তব্য নিয়ে উদ্বেগ জানান।
মোদি-ইউনূসের বৈঠক শেষে সাংবাদিকদদের সঙ্গে কথা বলেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিশ্রি। এ সময় তিনি মোদির এই অবস্থানের কথা তুলে ধরেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘এই মনোভাব থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে বাস্তবতার নিরিখে ইতিবাচক ও গঠনমূলক সম্পর্ক গড়ার বিষয়ে ভারতের আকাঙ্ক্ষার কথা আবারও অধ্যাপক ইউনূসের কাছে তুলে ধরেছেন তিনি (মোদি)। এ ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী আরও আহ্বান জানিয়েছেন, পরিবেশ নষ্ট করে এমন কোনো বক্তব্য পরিহার করাই সর্বোত্তম।’
সম্মেলনের অন্য উল্লেখযোগ্য দিকগুলো:
নৈশভোজে অংশগ্রহণ: ইউনূস, মোদি, শ্রীলঙ্কা ও নেপালের শীর্ষ নেতারা একসঙ্গে নৈশভোজে অংশ নেন, যা পারস্পরিক সম্পর্ক সুদৃঢ় করার একটি গুরুত্বপূর্ণ সুযোগ হয়ে ওঠে।
ব্যাংকক ঘোষণাপত্র ও ভিশন: সদস্য রাষ্ট্রগুলো যৌথভাবে ‘ব্যাংকক ঘোষণা’ এবং ‘বিমসটেক ব্যাংকক ভিশন’ গ্রহণ করে, যা টেকসই উন্নয়ন ও গভীর অর্থনৈতিক সংহতির রোডম্যাপ হিসেবে কাজ করবে।
সামুদ্রিক পরিবহন চুক্তি: বঙ্গোপসাগরীয় অঞ্চলে বাণিজ্য ও ভ্রমণ সহজতর করতে বিমসটেক দেশগুলো একটি সামুদ্রিক পরিবহন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর করে। বাংলাদেশের পক্ষে এতে সই করেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন।
চেয়ারম্যানশিপ গ্রহণ: আগামী দুই বছরের জন্য বিমসটেকের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশের অগ্রাধিকার ও অবস্থান: ইউনূস তার বক্তব্যে বাংলাদেশের সাংবিধানিক অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন এবং মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি (FTA) ও পরিবহন সংযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দেন। পাশাপাশি রাখাইন রাজ্যে স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করে রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিমসটেককে আরও সক্রিয় ভূমিকা নিতে আহ্বান জানান।