ব্যাংককে ড. ইউনূস- নরেন্দ্র মোদির বৈঠক শুক্রবার

- আপডেট সময় : ১০:৩২:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩ এপ্রিল ২০২৫ ২৬ বার পড়া হয়েছে

ব্যাংককে বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) সম্মেলনের সাইডলাইনে বৈঠকে বসতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। শুক্রবার (০৪ এপ্রিল) এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের দায়িত্ব গ্রহণের পর এই প্রথমবারের মতো অধ্যাপক ইউনূসের সঙ্গে নরেন্দ্র মোদির বৈঠক হতে চলেছে। প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেন, ‘বাংলাদেশ ও ভারত দুই দেশের সরকার প্রধানের মধ্যে আগামীকাল বৈঠক হবে’।
তিনি জানান, ব্যাংককে বৃহস্পতিবার বিমসটেক সম্মেলনের নৈশভোজে দুই নেতার সাক্ষাৎ হয় এবং তারা কুশলাদি বিনিময় করেন।
নৈশভোজে উভয় নেতাকে বেশ কিছু সময় ধরে ঘনিষ্ঠভাবে কথা বলতে দেখা গেছে।
বঙ্গোপসাগরীয় দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতা জোটের (বিমসটেক) শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে অধ্যাপক ইউনূস ও নরেন্দ্র মোদি বর্তমানে ব্যাংককে অবস্থান করছেন। ৪ এপ্রিল পর্যন্ত ব্যাংককে বিমসটেক সম্মেলন চলবে।
সূত্র: বাসস

এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছেন ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা ভারতের বলে দাবি করেছেন তিনি।
বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ড. ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে ‘স্থলবেষ্টিত’ বলায় এবং বাংলাদেশকে এই অঞ্চলের ‘সমুদ্র প্রবেশাধিকারের অভিভাবক’ হিসেবে উল্লেখ করার কয়েকদিন পর বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এর তীব্র প্রতিবাদ জানান।
জয়শঙ্কর বে অব বেঙ্গল ইনিশিয়েটিভ ফর মাল্টি সেক্টোরাল টেকনিক্যাল অ্যান্ড ইকোনমিক কো অপরেশন (বিমসটেক)-এ ভারতের কৌশলগত ভূমিকা তুলে ধরেন এবং ভারতের ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার উপকূলরেখা এবং পাঁচটি বিমসটেক সদস্যের সঙ্গে ভারতের ভৌগোলিক সংযোগের ওপর আলোকপাত করেন।
এক বিবৃতিতে জয়শঙ্কর বলেছেন, সর্বোপরি, আমাদের বঙ্গোপসাগরে দীর্ঘতম উপকূলরেখা রয়েছে, যা প্রায় ৬ হাজার ৫০০ কিলোমিটার। ভারত কেবল পাঁচটি বিমসটেক সদস্যের সঙ্গেই সীমান্ত ভাগ করে না, তাদের বেশিরভাগকে সংযুক্তও করে এবং ভারতীয় উপমহাদেশ ও আসিয়ানের মধ্যে সংযোগের একটি বড় অংশও প্রদান করে।
জয়শঙ্কর দাবি করেন, বিশেষ করে আমাদের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল বিমসটেকের জন্য একটি ‘সংযোগ কেন্দ্র হিসেবে’ আবির্ভূত হচ্ছে, যেখানে সড়ক, রেলপথ, পানিপথ, গ্রিড এবং পাইপলাইনের অসংখ্য নেটওয়ার্ক রয়েছে।
ভারতীয় পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দাবি, আমরা সচেতন যে এই বৃহত্তর ভৌগোলিক ক্ষেত্রে পণ্য, পরিষেবা এবং মানুষের সুষ্ঠু প্রবাহের জন্য আমাদের সহযোগিতা এবং সুবিধা প্রদান একটি অপরিহার্য পূর্বশর্ত। এই ভূ-কৌশলগত বিষয়কে মাথায় রেখে, আমরা গত দশকে বিমসটেক’কে শক্তিশালী করার জন্য ক্রমবর্ধমান শক্তি এবং মনোযোগ নিবেদিত করেছি। আমরা আরও বিশ্বাস করি যে সহযোগিতা একটি সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি, চেরি-পিকিং (পক্ষপাতদুষ্ট) বিষয় নয়।
চার দিনের চীন সফরে গিয়ে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ‘সেভেন সিস্টার্স’ খ্যাত সাতটি রাজ্যের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন।
ইউনূস বলেন, ভারতের পূর্বাঞ্চলের সেভেন সিস্টার্স নামে পরিচিত সাতটি রাজ্য। এই রাজ্যগুলো ভারতের স্থলবেষ্টিত অঞ্চল। সমুদ্রে পৌঁছানোর জন্য তাদের যোগাযোগের কোনো উপায় নেই। এই অঞ্চলের জন্য সমুদ্রের একমাত্র অভিভাবক বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, এটি বিশাল এক সম্ভাবনা উন্মোচন করে। এটি চীনা অর্থনীতির একটি সম্প্রসারণও হতে পারে।
ড. মূহাম্মদ ইউনূসের এই মন্তব্য নিয়ে ভারতের রাজনীতিক, সাবেক আমলা ও নীতি নির্ধারকদের মাঝে তোলপাড় শুরু হয়।