টাঙ্গাইলে মসজিদের ঈমামের রাজকীয় বিদায়

- আপডেট সময় : ১১:৪০:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫ ৩৬ বার পড়া হয়েছে

টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার উয়ার্শী ইউনিয়নের নতুন কহেলা জামে মসজিদের ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খানকে অবসরকালীন রাজকীয় বিদায় সংবর্ধনা দিয়েছেন গ্রামবাসী। প্রায় তিন দশক ইমামতি শেষে তাকে সম্মানিত করতে আয়োজন করা হয় এই ব্যতিক্রমী অনুষ্ঠান।
মঙ্গলবার দুপুরে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে ইমামকে ফুল ছিটিয়ে বরণ করা হয়, ক্রেস্ট প্রদান করা হয় এবং এককালীন পেনশন হিসেবে দেওয়া হয় ৯ লাখ টাকা। পরে তাকে ঘোড়ার গাড়িতে করে নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেওয়া হয়, সঙ্গে ছিল অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেলের শোভাযাত্রা।
১৯৯১ সালে মাত্র ৬০০ টাকা বেতনে নতুন কহেলা জামে মসজিদে ইমামতি শুরু করেন মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান। দীর্ঘ কর্মজীবনের শেষে তার বেতন দাঁড়ায় ১৭,৫০০ টাকা। তিনি ঢাকার লালবাগের একটি মাদ্রাসা থেকে মাওলানা পাস করেন এবং গ্রামে অবস্থানকালীন সময়ে অসংখ্য মানুষকে কুরআনের শিক্ষা দেন ও হাজারের বেশি জানাজার নামাজ পড়ান।

তার প্রতি গ্রামবাসীর ভালোবাসা ছিল অকল্পনীয়। গ্রামের প্রায় ৩০০ মানুষ ৭ কিলোমিটার পথ পায়ে হেঁটে তাকে তার নিজ বাড়িতে পৌঁছে দেন। বিদায়ের সময় তাকে বিভিন্ন উপহারও দেওয়া হয়।
নতুন কহেলা গ্রামের বাসিন্দা আবুল হাশেম খান বলেন, ‘ইমাম মাওলানা মোহাম্মদ শাহজাহান খান তার নিষ্ঠা ও ধর্মীয় জ্ঞান দিয়ে গ্রামবাসীর মনে স্থায়ী স্থান করে নিয়েছেন। তাকে বিদায় দিতে পেরে আমরা আবেগাপ্লুত।’
বিদায়ী ইমাম বলেন, ‘আমি দীর্ঘ কর্মজীবনে প্রায় ১,৫০০ মানুষের জানাজা পড়িয়েছি, ৬০০ জনকে কুরআন শিক্ষা দিয়েছি। আমার এই কাজের সুযোগ পেয়ে কৃতজ্ঞ। গ্রামবাসীর এই ভালোবাসা আমার জীবনের অন্যতম বড় অর্জন।’
নতুন কহেলা জামে মসজিদ কমিটির সভাপতি সেলিম খান বলেন, ‘এই বিদায় সমাজে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। একজন ইমামের প্রতি মানুষের এমন ভালোবাসা সত্যিই বিরল। তার ভবিষ্যৎ জীবনের স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করতে সরকারি চাকরির মতো পেনশন প্রদান করা হয়েছে।’