এ কেমন অভিনব কৌশলে ডাকাতি!

- আপডেট সময় : ০১:১৭:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৮ মার্চ ২০২৫ ৪৬ বার পড়া হয়েছে

রাজধানীর ধানমন্ডিতে অভিনব কৌশলে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট, সাংবাদিক ও ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয়ে ২০-২২ জনের একটি সংঘবদ্ধ চক্র বুধবার ভোরে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্সের মালিক এম এ হান্নান আজাদের বাসায় হানা দেয়। ডাকাতরা প্রশাসনের পরিচয় দিয়ে বাড়ির ভেতরে প্রবেশ করে এবং লুটপাট চালায়।
বাড়ির লোকজন বিষয়টি সন্দেহজনক মনে করে জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে। স্থানীয়দের সহায়তায় চার ডাকাতকে হাতেনাতে আটক করা হয়। পরবর্তী অভিযানে হাজারীবাগ এলাকা থেকে আরও দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ডাকাতদের কাছ থেকে র্যাব লেখা দুটি কালো জ্যাকেট, তিনটি কালো ক্যাপ, দুটি মাইক্রোবাস, পাঁচটি মোবাইল ফোন, একটি লোহার ছেনি, একটি স্লাই রেঞ্জ ও নগদ ৪৫ হাজার ১০০ টাকা উদ্ধার করা হয়েছে।
ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মিডিয়া ও পাবলিক রিলেশনস বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান জানান, ডাকাত দলটি ভোর চারটায় ধানমন্ডি ৮ নম্বর রোডের বাসায় প্রবেশ করে এবং প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ তলায় লুটপাট চালিয়ে প্রায় ৩৫ লাখ টাকার মালামাল নিয়ে যায়। তবে স্থানীয়রা সাহসিকতা দেখিয়ে পালানোর সময় চারজন ডাকাতকে ধরে ফেলে। পুলিশ পরে আরও দুইজনকে আটক করে।
ডিএমপি কমিশনার শেখ মো. সাজ্জাত আলী সাহসিকতার জন্য পাঁচজন শ্রমিককে পুরস্কৃত করার পাশাপাশি পুলিশের অক্সিলিয়ারি ফোর্সে নিয়োগ দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।
রমনা বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মাসুদ আলম জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা সংঘবদ্ধ ডাকাত দলের সক্রিয় সদস্য। তারা বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থার পরিচয় দিয়ে চুরি ও ডাকাতি করে। পুরো চক্রটি ২৫-৩০ জনের একটি দল নিয়ে কাজ করে। গ্রেপ্তারকৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা বিভ্রান্তিকর তথ্য দিচ্ছে, তবে রিমান্ডে নিয়ে বিস্তারিত তদন্ত করা হবে।
উল্লেখ্য, গত বছরের শেষের দিকে ‘অলংকার নিকেতন’ জুয়েলার্স থেকে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছিল। এ ঘটনায় তেজগাঁও থানায় একটি মামলা হয়েছিল। পুলিশ সন্দেহ করছে, একই চক্র ওই চুরির সঙ্গেও জড়িত থাকতে পারে।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ক্যশৈনু জানান, ডাকাতরা নিজেদের র্যাব, ম্যাজিস্ট্রেট ও ছাত্র প্রতিনিধি পরিচয় দিয়ে বাড়ির মালিককে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করে। তবে সন্দেহ হলে তিনি ৯৯৯-এ ফোন দেন। পুলিশ দ্রুত এসে এলাকাবাসীর সহায়তায় চারজনকে গ্রেপ্তার করে, যদিও বাকিরা পালিয়ে যায়। এ অভিযানে তিনজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। বাকিদের ধরতে অভিযান চলছে।