ঢাকা ১২:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন?

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট সময় : ০৯:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫ ৩৫ বার পড়া হয়েছে

ইরান-যুক্তরাষ্ট্র

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। বিশেষত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের মন্তব্য ও সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতা এই শঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলেছে। বেঁধে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

গত কয়েকদিন ধরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা ধারণা করা হচ্ছে ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতিরই অংশ। ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, যা ইরানের ওপর সামরিক পদক্ষেপের পূর্বাভাস হতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি ইরানে হামলা হয়, তবে রাশিয়া ও চীন ইরানের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। সম্প্রতি এই তিন দেশ একসঙ্গে নৌ-মহড়া চালিয়েছে, যা তাদের সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরের কৌশলগত ঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। ওয়াশিংটনের সামরিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেখানে বি-টু স্টেলথ বম্বার, সি-১৭ কার্গো বিমান এবং ১০টি অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ট্যাংকার মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিহাসে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন হামলার ক্ষেত্রে এই ঘাঁটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ভারতীয় মহাসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
ভারতীয় মহাসাগরে মার্কিন মহড়া

স্যাটেলাইট চিত্র ও ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডাটার বিশ্লেষণে জানা গেছে, ডিয়েগো গার্সিয়ায় অন্তত পাঁচটি বি-টু স্টেলথ বোমারু বিমান মোতায়েন করা হয়েছে, যা বাংকার ধ্বংসকারী বোমা বহনে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ইরানকে দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা নতুন সামরিক সংঘাতের সূচনা করতে পারে। ইরানও এর জবাবে নতুন মিসাইল সিটির উদ্বোধন করেছে এবং সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, চীন, রাশিয়া ও ইরান তাদের সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে যৌথ সামুদ্রিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। এই মহড়ার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তা বৃদ্ধি, জলদস্যুতা প্রতিরোধ এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা। তিন পরাশক্তির এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা চালালে তা বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের সংঘাতের জন্ম দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনার ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই উত্তেজনার পরিণতি কী হবে, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপের ওপর।

নিউজটি শেয়ার করুন

One thought on “তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন?

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

তবে কি তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ আসন্ন?

আপডেট সময় : ০৯:২৪:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ ২০২৫

আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্র যে কোনো সময় ইরানের পরমাণু স্থাপনায় হামলা চালাতে পারে। বিশেষত, ডোনাল্ড ট্রাম্পের আগের মন্তব্য ও সাম্প্রতিক সামরিক তৎপরতা এই শঙ্কাকে বাড়িয়ে তুলেছে। বেঁধে যেতে পারে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ।

গত কয়েকদিন ধরে ভারত মহাসাগরে মার্কিন সামরিক উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে, যা ধারণা করা হচ্ছে ইরানে সম্ভাব্য হামলার প্রস্তুতিরই অংশ। ওয়াশিংটন ইতোমধ্যে ইয়েমেনের বিদ্রোহীদের ঘাঁটিতে হামলা চালিয়েছে, যা ইরানের ওপর সামরিক পদক্ষেপের পূর্বাভাস হতে পারে।

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, যদি ইরানে হামলা হয়, তবে রাশিয়া ও চীন ইরানের পক্ষে অবস্থান নিতে পারে। সম্প্রতি এই তিন দেশ একসঙ্গে নৌ-মহড়া চালিয়েছে, যা তাদের সহযোগিতার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করছে।

লন্ডনভিত্তিক গণমাধ্যম ইরান ইন্টারন্যাশনাল জানায়, যুক্তরাষ্ট্র ভারত মহাসাগরের কৌশলগত ঘাঁটি ডিয়েগো গার্সিয়ায় সামরিক উপস্থিতি বাড়িয়েছে। ওয়াশিংটনের সামরিক পরিকল্পনার অংশ হিসেবে সেখানে বি-টু স্টেলথ বম্বার, সি-১৭ কার্গো বিমান এবং ১০টি অ্যারিয়াল রিফুয়েলিং ট্যাংকার মোতায়েন করা হয়েছে। ইতিহাসে দেখা গেছে, মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন হামলার ক্ষেত্রে এই ঘাঁটি ব্যবহার করা হয়েছে, যা নতুন যুদ্ধের আশঙ্কা আরও বাড়িয়ে তুলেছে।

ভারতীয় মহাসাগরে মার্কিন যুদ্ধজাহাজ
ভারতীয় মহাসাগরে মার্কিন মহড়া

স্যাটেলাইট চিত্র ও ফ্লাইট ট্র্যাকিং ডাটার বিশ্লেষণে জানা গেছে, ডিয়েগো গার্সিয়ায় অন্তত পাঁচটি বি-টু স্টেলথ বোমারু বিমান মোতায়েন করা হয়েছে, যা বাংকার ধ্বংসকারী বোমা বহনে সক্ষম। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই পদক্ষেপ ইরানের পরমাণু স্থাপনাগুলোর বিরুদ্ধে হামলার প্রস্তুতির ইঙ্গিত দিচ্ছে।

ওয়াশিংটনের সাম্প্রতিক কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপ ইরানের বিরুদ্ধে সরাসরি যুদ্ধের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে কিনা, তা নিয়ে বিশ্লেষকরা উদ্বিগ্ন। বিশেষ করে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের মাধ্যমে ইরানকে দুই মাসের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে, যা নতুন সামরিক সংঘাতের সূচনা করতে পারে। ইরানও এর জবাবে নতুন মিসাইল সিটির উদ্বোধন করেছে এবং সামরিক সক্ষমতা বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে।

এদিকে, চীন, রাশিয়া ও ইরান তাদের সামরিক সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে যৌথ সামুদ্রিক মহড়ায় অংশ নিচ্ছে। এই মহড়ার লক্ষ্য আন্তর্জাতিক সমুদ্র নিরাপত্তা বৃদ্ধি, জলদস্যুতা প্রতিরোধ এবং বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা। তিন পরাশক্তির এই পদক্ষেপ আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি বন্ধ করতে যুক্তরাষ্ট্র সামরিক হামলা চালালে তা বিশ্বব্যাপী বড় ধরনের সংঘাতের জন্ম দিতে পারে। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং চীনের মধ্যে উত্তেজনার ফলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। এই উত্তেজনার পরিণতি কী হবে, তা নির্ভর করছে ভবিষ্যতের কূটনৈতিক ও সামরিক পদক্ষেপের ওপর।