ঢাকা ১২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রত্যাশা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

জিললুর রহমান চৌধুরী
  • আপডেট সময় : ১১:২০:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫ ৫৬ বার পড়া হয়েছে

স্বাধীনতা দিবস

দৈনিক দেশ আমার অনলাইনের সর্বশেষ নিউজ পেতে অনুসরণ করুন গুগল নিউজ (Google News) ফিডটি

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এক গৌরবময় অধ্যায়ের স্মারক, যা বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও বিজয়ের প্রতীক। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আমরা যে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিলাম, তারই ফলস্বরূপ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল তখনই পাওয়া সম্ভব, যখন আমরা জাতি হিসেবে সব ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করতে পারব। স্বাধীনতা দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হলো একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়া।

প্রথমত, আমাদের প্রত্যাশা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু আজও আমরা দুর্নীতির কারণে সমাজে বৈষম্য ও অসঙ্গতির শিকার হচ্ছি। তাই স্বাধীনতা দিবসে আমাদের সংকল্প হতে হবে, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবো।

দ্বিতীয়ত, একটি শিক্ষিত জাতি গঠনের প্রত্যাশা আমাদের সকলের। শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড, যা উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করেই না, বরং দক্ষতা ও মানবিক গুণাবলিও অর্জন করতে পারে।

তৃতীয়ত, আমাদের প্রত্যাশা একটি প্রযুক্তি নির্ভর ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি। বিশ্ব ক্রমশ প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এবং বাংলাদেশকেও এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। কৃষি, শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে আরও স্বাবলম্বী করতে হবে, যাতে আমরা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারি।

চতুর্থত, স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন সমাজে নারীর অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করা যাবে। নারী-পুরুষের সমান সুযোগ এবং নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত। একটি সমতা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ আরও জোরদার করতে হবে।

পঞ্চমত, স্বাধীনতা দিবসে আমাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো পরিবেশ সংরক্ষণ। জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর সমস্যা, এবং বাংলাদেশও এর মারাত্মক প্রভাবের শিকার। তাই আমাদের পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করতে হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ পৃথিবী রেখে যেতে পারি।

অবশেষে, আমাদের প্রত্যাশা একটি সম্প্রীতির বাংলাদেশ, যেখানে ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই একসাথে দেশ গঠনে কাজ করবে। স্বাধীনতা শুধু একটি ভূখণ্ড অর্জনের নাম নয়, এটি একটি মানসিকতা, যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও উন্নত দেশ গঠনে অনুপ্রাণিত করে।

স্বাধীনতা দিবস শুধু উদযাপনের জন্য নয়, এটি আমাদের জন্য আত্মপর্যালোচনারও দিন। আমরা কি সত্যিই স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি? যদি না পারি, তবে এখনই সময় নতুন করে শপথ নেওয়ার—একটি সোনার বাংলা গড়ার, যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের মহান নেতারা এবং লক্ষ লক্ষ শহীদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

4 thoughts on “প্রত্যাশা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

আপনার মন্তব্য

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল এবং অন্যান্য তথ্য সংরক্ষন করুন

আপলোডকারীর তথ্য

প্রত্যাশা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ

আপডেট সময় : ১১:২০:২৩ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মার্চ ২০২৫

বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস এক গৌরবময় অধ্যায়ের স্মারক, যা বাঙালি জাতির আত্মত্যাগ, সংগ্রাম ও বিজয়ের প্রতীক। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ আমরা যে স্বাধীনতার সংগ্রাম শুরু করেছিলাম, তারই ফলস্বরূপ আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি। কিন্তু স্বাধীনতার প্রকৃত সুফল তখনই পাওয়া সম্ভব, যখন আমরা জাতি হিসেবে সব ক্ষেত্রে অগ্রগতি অর্জন করতে পারব। স্বাধীনতা দিবসে আমাদের প্রত্যাশা হলো একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ বাংলাদেশ গড়া।

প্রথমত, আমাদের প্রত্যাশা একটি দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ। স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিল শোষণমুক্ত সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যেখানে সকল নাগরিকের সমান অধিকার থাকবে। কিন্তু আজও আমরা দুর্নীতির কারণে সমাজে বৈষম্য ও অসঙ্গতির শিকার হচ্ছি। তাই স্বাধীনতা দিবসে আমাদের সংকল্প হতে হবে, আমরা দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবো এবং ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার জন্য কাজ করবো।

দ্বিতীয়ত, একটি শিক্ষিত জাতি গঠনের প্রত্যাশা আমাদের সকলের। শিক্ষা একটি জাতির মেরুদণ্ড, যা উন্নয়নের প্রধান চালিকাশক্তি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে হবে, যাতে শিক্ষার্থীরা শুধু সার্টিফিকেট অর্জন করেই না, বরং দক্ষতা ও মানবিক গুণাবলিও অর্জন করতে পারে।

তৃতীয়ত, আমাদের প্রত্যাশা একটি প্রযুক্তি নির্ভর ও আত্মনির্ভরশীল অর্থনীতি। বিশ্ব ক্রমশ প্রযুক্তির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে, এবং বাংলাদেশকেও এই পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। কৃষি, শিল্প ও তথ্য প্রযুক্তির উন্নয়নের মাধ্যমে দেশকে আরও স্বাবলম্বী করতে হবে, যাতে আমরা বৈশ্বিক অর্থনীতিতে শক্ত অবস্থান তৈরি করতে পারি।

চতুর্থত, স্বাধীনতার প্রকৃত অর্থ তখনই বাস্তবায়িত হবে, যখন সমাজে নারীর অধিকার ও সম্মান নিশ্চিত করা যাবে। নারী-পুরুষের সমান সুযোগ এবং নিরাপদ পরিবেশ সৃষ্টি করা আমাদের অন্যতম লক্ষ্য হওয়া উচিত। একটি সমতা ভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য নারী শিক্ষা, কর্মসংস্থান ও রাজনৈতিক অংশগ্রহণ আরও জোরদার করতে হবে।

পঞ্চমত, স্বাধীনতা দিবসে আমাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রত্যাশা হলো পরিবেশ সংরক্ষণ। জলবায়ু পরিবর্তন বিশ্বব্যাপী একটি গুরুতর সমস্যা, এবং বাংলাদেশও এর মারাত্মক প্রভাবের শিকার। তাই আমাদের পরিবেশবান্ধব উন্নয়ন নীতি গ্রহণ করতে হবে, যাতে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি সুস্থ পৃথিবী রেখে যেতে পারি।

অবশেষে, আমাদের প্রত্যাশা একটি সম্প্রীতির বাংলাদেশ, যেখানে ধর্ম, বর্ণ ও রাজনৈতিক মতভেদের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই একসাথে দেশ গঠনে কাজ করবে। স্বাধীনতা শুধু একটি ভূখণ্ড অর্জনের নাম নয়, এটি একটি মানসিকতা, যা আমাদের ঐক্যবদ্ধ ও উন্নত দেশ গঠনে অনুপ্রাণিত করে।

স্বাধীনতা দিবস শুধু উদযাপনের জন্য নয়, এটি আমাদের জন্য আত্মপর্যালোচনারও দিন। আমরা কি সত্যিই স্বাধীনতার স্বপ্ন পূরণ করতে পেরেছি? যদি না পারি, তবে এখনই সময় নতুন করে শপথ নেওয়ার—একটি সোনার বাংলা গড়ার, যে স্বপ্ন দেখেছিলেন আমাদের মহান নেতারা এবং লক্ষ লক্ষ শহীদ।